প্রফেশনাল-গ্রেড আতশবাজি প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে লাখ লাখ পাখির আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ২০১০ সালের থার্টি ফার্স্ট নাইটের ঘটনায় আরকানসাসে প্রায় ৫,০০০ লাল-ডানা-ব্ল্যাকবার্ড আতশবাজির শব্দে চমকে উঠে তাদের রাতের আশ্রয় ছেড়ে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়ায়। এই পাখিরা রাতের অন্ধকারে ভাল দেখতে পায় না, তাই দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটে যাবার সময় তারা ভবন, গাছ, গাড়ি এবং বিভিন্ন বস্তুর সাথে ধাক্কা খেতে থাকে। পরদিন সকালে আরকানসাসের রাস্তায় পড়ে থাকা হাজার হাজার লাল-ডানা-ব্ল্যাকবার্ড।
রোমেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ২০২০ সালের থার্টি ফার্স্ট নাইটের উদযাপনের পরের দিন শত শত স্টারলিং পাখিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বার্মিংহাম, যুক্তরাজ্যে ২০২৩ সালের এক গবেষণায় আতশবাজি চলাকালীন পাখিদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। রাডার প্রযুক্তির সাহায্যে দেখা যায়, আতশবাজির শব্দ ও আলোতে পাখিরা হুড়োহুড়ি করে পালানোর চেষ্টা করে। একই বছরে ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে যে হাঁস, গাংচিল এবং এ ধরণের বড় পাখিরা আতশবাজির সময় অনেকটা উচ্চতায় উড়ে থাকতে বাধ্য হয়। এই দীর্ঘ সময় তাদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় ভেসে থাকার ফলে শক্তিক্ষয় হয়, যা তাদের বেঁচে থাকার উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে বলে ধারনা করা হয়।
কিন্তু আমরা, মানুষ। আমাদের আনন্দ লাভের উপায়গুলোই উৎকৃষ্ট আনন্দ লাভের উপায়!
তবু আশা রাখি, যেমন ১৮৬৫ সালের ডিসেম্বরে এক গভীর বোধোদয়ের মাধ্যমে মানবতা অ-অপরাধীদের জন্য দাসত্বের অবসান ঘটায়, হয়ত তেমনই কোনও এক উপলব্ধির মুহূর্তে, বহু বছর পরে কোনও এক ডিসেম্বর মাস থেকে পাখিরা আর শুনবে না মানবের এই গগনবিদারী আনন্দের শব্দ!
শুভ হোক নতুন বছর।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩